Enter your email address below and subscribe to our newsletter

মহান মে দিবস শ্রমজীবী মানুষের অধিকার, প্রতিষ্ঠা সংগ্রামের এক অনন্য দিন

Share your love

শ্রম ছাড়া উৎপাদন সম্ভব নয়, শ্রমের মর্যাদা ছাড়া গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়, শ্রমিকের জীবনের নিরাপত্তা ছাড়া উৎপাদনশীল মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। শ্রম ও মেধা দিয়ে যে উৎপাদন, তা থেকেই সমাজ বিকশিত হয়, পুঁজি বিকশিত হয়। কিন্তু মানুষ যখন কৃষি থেকে বিচ্যুত হয়ে শিল্পে এসেছে, তখন থেকে পুঁজিপতিরা ক্ষুদ্র থেকে দ্রুতই বড় হতে শুরু করে এবং যে মানুষ কৃষক থেকে শ্রমিকে রূপান্তরিত হয়েছে, তারা সত্যিকার অর্থে সর্বহারা শ্রেণি হিসেবে আরো কঠিন পরিস্থিতিতে পড়ে। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তির পথ দেখিয়েছে মে দিবস। মে দিবস শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা সংগ্রামের এক অনন্য দিন ।

প্রতি বছর ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রম দিবস বা আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসাবে পালন করা হয়। আন্তর্জাতিক শ্রমিক আন্দোলন ও শ্রম অধিকার আদায়ের এ দিনটি বছরের পর বছর ধরে বিশ্বব্যাপী যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়ে আসছে।

বিশ্বে বর্তমানে মোট ২০৬ টি দেশ রয়েছে। অথচ শ্রমিকদের সম্মানে মে দিবসে জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে পালন করে বিশ্বের মাত্র ৮০টি দেশ।
কিন্তু যাদের নিয়ে এই দিবস তারা এই সম্পর্কে কতটা অবগত? অনেক শ্রমিক জানেনই না এর ইতিহাস।

১ মে কেন শ্রমিক দিবস?
এই দিবসের সূচনা মূলত আজ থেকে ১২৭ বছর আগে আমেরিকান সমাজে। ১৮৮৬ ১ মে আমেরিকাতে শুরু হয় শ্রমিক আন্দোলন। অধিকার আদায়ে শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা সেদিন পথে নেমেছিলেন।

কারণ সেই সময় দিনে ১৫-১৬ ঘণ্টা কাজ করতে হতো এক একজন শ্রমিককে। কিন্তু বিনিময়ে পারিশ্রমিক ছিল খুবই সল্প, যা তাদের তাদের জীবনধারণে পর্যাপ্ত ছিল না। এ নিয়ে ধীরে ধীরে ক্ষোভ সৃষ্টি হতে থাকে তাঁদের মনে। সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ এই আন্দোলন।

১৮৮৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে একদল শ্রমিক মালিকপক্ষকে দৈনিক ৮ ঘণ্টা কর্মসময় নির্ধারণের দাবি জানান। এ দাবি পূরণের সময় হিসেবে ১৮৮৬ সালের ১ মে’কে নির্ধারণ করেন শ্রমিকরা। কিন্তু কারখানার মালিকরা শ্রমিকদের এ দাবি কানে তোলেননি।

পরবর্তীতে ১৮৮৬ সালের ৪ মে শিকাগোর হে মার্কেটে শ্রমিকদের বিক্ষোভের সময় হঠ‍াৎ পুলিশের ওপর বোমা হামলায় নিহন হন একজন পুলিশ কর্মকর্তা। তাৎক্ষণিক এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করে পুলিশ। নিহত হন প্রায় ১০-১২ জন শ্রমিক। আহত হয়েছিলেন বহু।

কিন্তু শ্রমিকদের এই বলিদান বিফলে যায়নি। শিকাগো শহরের রক্তাক্ত ইতিহাস সারা বিশ্বে শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে আলোড়ন তোলে।

এ ঘটনার দুই বছর পর ১৮৮৯ সালে প্যারিসে ফরাসি বিপ্লবের ১০০ বছর পূর্তিতে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিকের প্রথম কংগ্রেসে শিকাগো শ্রমিক আন্দোলনের দিনটিকে ১৮৯০ সাল থেকে পালনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। ১৮৯১ সালে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় কংগ্রেসে প্রস্তাবটি আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হয়।

সেই থেকে শ্রমিকদের কাজের সময়সীমা দিনে আট ঘণ্টা করে দেওয়া হয়। পাশাপাশি, এই দিনটিকে শ্রমিক দিবস হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই দিনে ছুটির কথাও বলা হয়। সেই থেকে আজও মে মাসের প্রথম দিনটিকে (মে ডে) শ্রমিক দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

বাংলাদেশে মে দিবস
বিশ্বের ৯০টি দেশে সরকারিভাবে মে মাসের প্রথম দিনটিকে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। মিছিল, সভা, বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালিত হয় মে দিবস।

শ্রমিকদের অধিকার ও দাবির প্রতি সম্মান দেখিয়ে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে মে দিবস পালিত হয়। স্বাধীনতার পর মে দিবস রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায়।

আজহারুল হক
সম্পাদক ও প্রকাশক এবিসি অনলাইন টুয়েন্টিফোর ডটকম

Împărtășește-ți dragostea
Sader Bhulo
Sader Bhulo
Articole: 174

Lasă un răspuns

Adresa ta de email nu va fi publicată. Câmpurile obligatorii sunt marcate cu *

Stay informed and not overwhelmed, subscribe now!