সেহরির সময় যে খাবার খাওয়া প্রয়োজন
Share your love
রোজায় প্রতিদিনের খাবারের মেন্যুতে আসে ভিন্নতা। অনেকেই মনে করেন রোজায় ১৪/১৫ ঘণ্টা না খেয়ে থেকে স্বাস্থ্যহানি ঘটতে পারে।
তাই ইফতার ও সেহরিতে বেশি বেশি খাওয়া ভালো। তাই রোজায় রকমারি খাবারের আয়োজন বেড়ে যায়, যা অনেক ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্য উপযোগী নয়। তবে দৈনিক চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রেখেই এসময় খাদ্য নির্বাচন করা দরকার।
রোজা পালনের জন্য প্রয়োজন সঠিক ডায়েট নির্বাচন, শারীরিক সুস্থতা, মানসিক শক্তি এবং অদম্য ইচ্ছা ও আনুগত্য। আর চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদদের মতে, কিছু নিয়ম নীতি ও পরামর্শ অনুসরণ করলে, কষ্ট ছাড়া সহজেই রোজা পালন করা যায়।
আসুন জানি কী খাবেন সেহরিতে …
রমজানে স্বাভাবিক নিয়ম পরিবর্তন করে সুবেহ সাদিকের আগে ঘুম থেকে উঠে খাওয়া দাওয়া সেরে নিতে হয়। সকালের নাস্তার পরিবর্তে খুব ভোরে সারাদিনের উপবাসের সময় চলার মতো খাওয়ার প্রয়োজন হয়। শরীরটাকে সুস্থ রাখার জন্য সেহরি খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মনে রাখতে হবে, সেহরির খাবার মুখরোচক, সহজপাচ্য ও স্বাস্থ্যসম্মত হওয়া প্রয়োজন। অধিক তেল, অধিক ঝাল, অধিক চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়া একদম উচিত নয়। ভাতের সঙ্গে মিশ্র সবজি, মাছ অথবা মাংস খাবেন। অনেকেই মনে করেন, যেহেতু সারাদিন না খেয়ে থাকতে হবে, তাই সেহেরির সময় প্রয়োজনের অতিরিক্ত বেশি খাবার খেতে হবে। তা মোটেই ঠিক নয়, কারণ চার পাঁচ ঘণ্টা পার হলেই খাদ্যগুলো পাকস্থলী থেকে অন্ত্রে গিয়ে হজম হয়ে যায়। তাই প্রয়োজনের তুলনায় বেশি না খাওয়াই ভালো বরং মাত্রাতিরিক্ত খেলে ক্ষতির আশঙ্কাই বেশি।
পিপাসা নিবারণ হয়, সেই পরিমাণ পানি নিজের অভ্যাস অনুযায়ী পান করতে হবে। দীর্ঘ সময় অভুক্ত থাকার কারণে শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দিতে পারে এবং পানি শূন্যতার কারণে শরীরে নানা জটিলতা দেখা দেয়। তাই ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে অন্তত দেড় থেকে দুই লিটার পানি পান করবেন। অনেকে পানির পরিবর্তে লেমন অথবা রোজ ওয়াটার, শরবত, ভিটামিন ওয়াটারসহ নানা ধরনের প্রক্রিয়াজাত পানীয় পান করেন। এ ব্যাপারে পুষ্টিবিদদের অভিমত, রোজাদারদের শুধুমাত্র বিশুদ্ধ পানি পান করাই ভালো। কার্বোনেটেড ও সুগার ড্রিংক, চা ও কফি পান করলে শরীর থেকে অধিক পানি বের হয়ে যায়। তাই কার্বোনেটেড, বেভারেজ ও সুগার ড্রিংক বা নানা ধরনের শরবত পরিহার করা উচিত। রোজাদারদের প্রচুর সবুজ শাকসবজি, ফলমূল আহার করা উচিত।
প্রয়োজনীয় টিপস: সেহরিতে সহজ পাচ্য খাবার খান। রান্নার সময় খাবারে ডালডার পরিবর্তে সয়াবিন তেল ব্যবহার করুন, তবে যতটা সম্ভব কম পরিমাণে ব্যবহার করুন। অতিরিক্ত লবণ ও লবণাক্ত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন। কারণ এসব রোজার সময় পানির পিপাসা বৃদ্ধি করে। যাদের চা, কফি, সিগারেট, মদ প্রভৃতি বাজে আসক্তি আছে, তারা এগুলো কমিয়ে আনতে চেষ্টা করুন। কারণ হঠাৎ এগুলো ছেড়ে দিলে মাথা ব্যথা, মেজাজ খিটখিটে হওয়া ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
ঘুমানোর আগে ও সেহেরির পরে অবশ্যই দাঁত ব্রাশ করতে ভুলবেন না। রোজা রাখা অবস্থায় সকালে ব্যায়াম না করে ইফতারের পর ব্যায়াম করা উচিত। খাওয়ার আগে অবশ্যই হাত ধুতে ভুলবেন না। এই সময়ে হাঁচি, কাশির মতো ছোঁয়াচে রোগ বেশি দেখা যায়, তাই যারা এতে আক্রান্ত, তাদের কাছ থেকে সাবধান থাকা উচিত। দিনে গরমের সময়ে ঠাণ্ডা ও ছায়া-যুক্ত স্থানে থাকা উচিত। সম্ভব হলে শারীরিক পরিশ্রম কম করুন। দৈনিক কাজ-কর্ম এমনভাবে ঠিক করুন, যেন বেশ ভালো ভাবে ঘুমানো যায়।