ফরিদপুরে ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড অন্তত ২৫ গ্রাম
Share your love
ফরিদপুর প্রতিনিধি
আধা ঘন্টা ব্যাপী ঘূর্ণিঝড়ে ফরিদপুরের বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গা উপজেলায় ঘূর্ণিঝড়ে তিনটি ইউনিয়নের অন্তত ২৫ টি গ্রাম লন্ডভন্ড হয়ে গেছে হয়ে গেছে।
ঝড়ে শতাধিক বসতঘর ও ছোট ছোট বাজারের দোকানপাট বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া চলতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুতের তার ছিড়ে বিদ্যুত সঞ্চালন বন্ধ রয়েছে বিভিন্ন এলাকায় ।
বুধবার(২৭ মার্চ) দিবাগত রাত একটার দিকে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার চতুল ইউনিয়ন এবং আলফা ডাঙ্গা উপজেলার পাচুড়িয়া ও বানা ইউনিয়নের ঘূর্ণিঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে ঘরবাড়ি,গাছপালা,ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, ঝড়ে অসংখ্য গাছপালা ভেঙে এবং উপড়ে পড়েছে। অনেক জায়গায় সড়কের উপরে গাছ পড়ে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটেছে। বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে অন্ধকার হয়ে যায় দুটি ইউনিয়নের গোটা কয়েকটি গ্রাম।
বানা ইউনিয়নের কঠুরাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা ইমরান হোসেন বলেন, বানা ইউনিয়নের শিরগ্রাম,গড়ানিয়া,পাকুড়িয়া,টাবনী,টোনাপাড়া, শিয়ালদি চরপাড়া,জয়দেবপুর,আউশির হাট,কঠুরাকান্দি,মাজপাড়া,আড়পাড়া সহ অন্তত ১৪ টি গ্রামে ভয়াবহ ঝড় আঘাত হানে। ঝড়ে
কাচাঁ-আধাপাকা ঘরবাড়ি, গাছপালা,পেঁয়াজ, রসুন, মশুরি,ধনিয়া, ধান,গমসহ কৃষি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। বিদ্যুতের তার ছিড়ে গ্রামগুলোতে বিদ্যুত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে গেছে।
পাচুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য(মেম্বার)মোঃ আমিনুর রহমান বলেন, ঝড়ে আমার ঘরবাড়ি,ফসলি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও যুগীবরাট, ভাটপাড়া, চাদড়া, পাচুড়িয়া, দেউলি,চরনারানদিয়া,ধুলজুড়ি, চরভাটপাড়া সহ ৮ গ্রামে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
এ ব্যাপারে তেতুল ইউনিয়নের জয়দেবপুরের ইয়াসিন ফকির, মন থাকি গ্রামের পানু ফকিরসহ স্থানীয়রা জানান, ঝড়ের কারণে এসব এলাকার মাঠের ফসলের ক্ষতি হয়েছে, রামচন্দ্রপুর বাজারের অন্তত ছয়টি দোকান ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। রামচন্দ্রপুরে বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়েপড়েছে।
পাচুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, আমি এই মুহুর্তে ঢাকায় আছি। তবে শুনেছি আমার পাচুড়িয়া ইউনিয়ন ও পার্শ্ববর্তী বানা ইউনিয়নে ঝড়ে ৯টি গ্রামে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। খোঁজ খবর নিয়ে পরবর্তীতে বিস্তারিত তথ্য জানানো যাবে।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহিদুল হাসান জাহিদ বলেন, বুধবার রাত একটার দিকে ঘূর্ণিঝড়ে দুই ইউনিয়নের অন্তত ২২টি
গ্রামের প্রায় শতাধিক কাচাপাকা বাড়িঘর ও কয়েকশো গাছপালা উপড়ে যায়। বিস্তীর্ণ জমির ফসল বিনষ্ট হয়েছে। অনেকেই ঘরবাড়ি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নেন। ঘটনাস্থলে পৌছে তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে কাজ শুরু করা হয়েছে।
পল্লী বিদ্যুত সমিতির আলফাডাঙ্গা সাব জোনাল অফিসের এজিএম ফাহিম হাসান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের ফলে সেখানে কয়েকটি গ্রামে বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুতের তাঁর ছিড়ে গেছে,কয়েকটি খুটি ভেঙ্গে অনেকগুলো আঁকা বাকা হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করতে কাজ চলছে।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক(ডিসি) মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ঘটনাস্থলে পৌছে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করতে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সর্বাত্মক সাহায্য সহযোগিতা করা হবে।