পাটুরিয়ায় ফেরি ডুবির ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত ১১
Share your love
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাটে স্টাফদের গাফলতি ও অবহেলার কারণে ফেরি রজনীগন্ধা ডুবেছিল উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদনে ১১জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
ফেরির প্রায় সব স্টাফকে শাস্তির আওতায় আনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা অঞ্চলের উপ-মহাব্যবস্থাপক শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ।
তিনি জানান, বিআইডব্লিউটিসির ওয়েবসাইট থেকে রজনীগন্ধা ফেরির স্টাফদের বরখাস্তের কপি সংগ্রহ করা হয়। তাদের গত ২৯ ফেব্রুয়ারি বরখাস্ত করা হয়েছে। ৩ মার্চ বরখাস্তের আদেশ বিআইডব্লিউটিসির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
সাময়িক বরখাস্তকৃতরা হলেন- ফেরির সেকেন্ড মাস্টার মো. আঞ্জুমান, ইনল্যান্ড মাস্টার অফিসার মেহের আলী, লস্কর মো. মুরাদ, মানিক রায়, আরিফুর রহমান, মনির আহমেদ, গ্রিজার মামুন সিকদার, এনায়েত হোসেন, মাছুম শিকদার ও হুইল সুকানী সবুজ মিয়া। এছাড়াও এজিএম (মেরিন) মো. আহম্মেদ আলীসহ কয়েকজনকে শোকজ করা হয়েছে।
সংস্থার চিফ পার্সনাল ম্যানেজার মো. ফজলে রাব্বি স্বাক্ষরিত বরখাস্তের ওই আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, তদন্ত কমিটি সার্বিক বিষয়টি তদন্ত করে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে ইনচার্জ মাস্টারের বিধি লঙ্ঘন এবং অন্যান্য কর্তব্যরত স্টাফদের চরম গাফিলতি ও দায়িত্বহীনতার কারণে ফেরিটি দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে মর্মে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে। তাই এহেন আচরণ ও কার্যকলাপ চাকরি নিয়ম শৃঙ্খলাপরিপন্থি ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই কর্মচারী চাকরি প্রবিধানমালা-১৯৮৯এর ৪৬(১) ধারা মোতাবেক চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। বিধিমোতাবেক তারা খোরাকি ভাতা প্রাপ্য হবেন। যথা সময়ে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হবে।
বিআইডব্লিউটিসির আরিচা অঞ্চলের উপ-মহাব্যবস্থাপক শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ জানান, রজনীগন্ধা ফেরির বাবুর্চি, পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ দুর্ঘটনায় সময় ফেরিতে উপস্থিত ছিলেন না এমন ৪জন ছাড়া বাকি সবাইকে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতে যাতে এমন দুর্ঘটনা আর না ঘটে এজন্য কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অনেকগুলো নতুন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ছেড়ে যাওয়ার আগেই প্রতিটি ফেরির পরীক্ষা-নীরিক্ষা করা হচ্ছে। যাত্রী ও পরিবহন ধারণক্ষমতা ফেরির সামনে লিখে রাখা হচ্ছে। বেশ কয়েকটি তদারকি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই নির্দেশনাগুলো প্রতি ট্রিপেই পালন করা হচ্ছে।
গত ১৭ জানুয়ারি মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ৫ নম্বর ঘাটের কাছে পদ্মা নদীতে ৯টি যানবাহন নিয়ে ডুবে যায় ‘রজনীগন্ধা’ নামে ইউটিলিটি ফেরি। এতে প্রাণ হারান ফেরির দ্বিতীয় ইঞ্জিন চালক হুমায়ুন কবীর। ৮ দিনের মাথায় ফেরিটি উদ্ধার করে উদ্ধারকারী জাহাজ ‘প্রত্যয়’। উদ্ধারের পর ফেরিটি মেরামতের জন্য নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ডে পাঠানো হয়েছে।
প্রথমদিকে বিআইডব্লিউটিসি কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে জানান, বাল্কহেডের ধাক্কায় ফেরিটি ডুবি গেছে। কিন্তু স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কোন কিছুর সাথে আঘাত ছাড়াই ফেরিটি নোঙর করা অবস্থায় আস্তে আস্তে ডুবে যায়। এ ঘটনায় বিআইডব্লিউটিসি ও মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসন দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে তারা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।